গত এক সপ্তাহের বেশী সময় ধরে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের ফলে কাচালং নদীর পানি বৃদ্ধি হয়ে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৭ টি ওয়ার্ডের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয় এতে ফসলী জমির ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং পানিবন্দী হয় প্রায় দুই হাজারের অধিক পরিবার, বন্যার্ত পরিবার সমুহ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করে বুধবার (৬ আগস্ট) বিকাল থেকে।
কাচালং নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে কাপ্তাই হ্রদের পানি কাপ্তাই বাধের বিপদসীমা অতিক্রম করলে মঙ্গলবার (৫আগস্ট) মধ্য রাত হতে কর্ণফুলী নদীতে পানি নিস্কাশন শুরু করে কর্ণফুলী বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ফলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাঘাইছড়ির নিন্মাঞ্চলের পানি নেমে যেতে শুরু করে। বন্যার্তদের জন্য বাঘাইছড়ি উপজেলা প্রশাসন ৫৫ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা রাখলেও মাত্র ৫ টি আশ্রয় কেন্দ্রে শতাধীক পরিবার আশ্রয় নেয়।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকালে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানরত বন্যার্তদের মাঝে ১০ কেজি চাল, বিশুদ্ধ পানি সহ শুকনা খাবার বিতরণ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার, পৌরসভার হাজীপাড়া এলাকা ও বাঘাইছড়ি ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড পূর্ব লাইল্যাঘোনা এলাকার বন্যার্তদের মাঝেও একই ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়, সারাদিনে ৪ শতাধীক বন্যার্ত পরিবারের মাঝে এসব ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। ত্রাণ বিতরণকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার সহ বাঘাইছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির, বাঘাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কনকন চাকমা, মহিলা মেম্বার জান্নাতুল ফেরদৌস উপস্থিত ছিলেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানি কমতে থাকায় কাচালং নদীর পানিও কমায় আশ্রয় কেন্দ্র হতে প্রায় পরিবারই বাড়িতে ফিরেছেন বিকালেই। আজ শুক্রবার (৮ আগস্ট) সকালে পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড এলাকার বন্যার্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুপ্তশ্রী সাহা, এসময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক পৌর কাউন্সিলর ইউসুফ নবী। এছাড়া সাজেক ইউনিয়নেও পানিবন্দীদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার জানান, বাঘাইছড়িতে অতিবৃষ্টি হলেই বন্যার কবলে পড়ে নিচু অঞ্চলের লোকজন তাদের জন্য সর্বাত্মক আশ্রয় কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে, নিয়মিত খোজ খবর রাখা হচ্ছে এবং বড় ধরনের বন্যার আশংকাজনক হলে বন্যার্তদের উদ্ধারের জন্যও প্রশাসনের টীম প্রস্তুর রয়েছে। ইতিমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা বন্যার্ত পরিবার সহ পানিবন্দী প্রায় পাচশতাধীক পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে এবং এই সহায়তা চলমান রয়েছে। তিনি জানান বর্তমানে কাপ্তাই বাধের জলকপাট সাড়ে ৩ ফুট পরিমানে খোলা হয়েছে যার ফলে খুব দ্রুত পানি নেমে যাচ্ছে বৃষ্টি না হলে এই পানি দ্রুত নেমে পানিবন্দী হতে নিচু অঞ্চলের লোকজন মুক্তি পাবে বলে আশা করছি।
সম্পাদক – মাহমুদুল হাসান সোহাগ | ঠিকানা – বাঘাইছড়ি, রাঙ্গামাটি | মোবাইল- ০১৬৯০-১৪৪৫৪