সাংবাদিকরাও শ্রমিক: কলমের খুঁটি ধরে সমাজ বদলের লড়াই প্রকাশিত: ৯:২৪ অপরাহ্ণ, মে ১, ২০২৫ মো: আরিফুল ইসলাম আজ আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। বিশ্বের কোটি কোটি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও মর্যাদার জন্য এই দিনটি উৎসর্গ করা হলেও এক শ্রেণির শ্রমিক রয়েছেন যারা এখনও স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত, আর তারা হলো সাংবাদিক। সংবাদপত্র, টেলিভিশন, অনলাইন কিংবা স্থানীয় মিডিয়ায় কাজ করা সাংবাদিকরাও শ্রমিক, যারা প্রতিদিন ঘাম ঝরান, ঝুঁকি নেন, কিন্তু প্রাপ্য সম্মান ও সুবিধা পান না। সাংবাদিকতা অনেকের চোখে সম্মানজনক ও গ্ল্যামারাস পেশা। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা মাঠে রিপোর্টিং করা, গভীর রাতে সংবাদ সংগ্রহ করা, দুর্গম পাহাড়ে পৌঁছে ক্যামেরা চালানো, এমনকি হুমকি-ধামকির মধ্যেও সত্য তুলে ধরা এসবই একজন সাংবাদিকের বাস্তব চিত্র। অথচ অধিকাংশ সাংবাদিক বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ে, কোনো নিয়োগপত্র ছাড়াই কাজ করেন। তাদের নেই নির্ধারিত বেতন, নেই স্বাস্থ্যসেবা বা ঝুঁকি ভাতা। অনেকে মাসের পর মাস রিপোর্ট করে যান বিনা পারিশ্রমিকে, কেউ কেউ নামমাত্র সম্মানী পান। একটি রিপোর্ট ফলো করতে গিয়ে ব্যক্তিগত খরচে পরিবহন, ফোন বিল, ইন্টারনেট খরচ করতে হয়, যার কোনো সরকারি বা কর্পোরেট সহায়তা নেই। তবুও তারা থেমে থাকেন না, কারণ তাদের দায়িত্ব সত্য পৌঁছে দেওয়া। ব্যক্তিগত মতে যদি বলি, অনেকে ভাবে আমরা শুধু অফিসে/ঘরে বসে নিউজ লিখি, কিন্তু বাস্তবে আমরা রোদে-বৃষ্টিতে ভিজে, দুর্গম জায়গায় গিয়ে রিপোর্ট করি। নিজের টাকা খরচ করে নিউজ পাঠাই। আমরাও শ্রমিক- তফাৎ শুধু, আমরা হাতুড়ি নয়, কলম চালাই। বাংলাদেশে সাংবাদিকদের জন্য এখনো কোনো সর্বজনীন বেতন কাঠামো নেই। নেই শ্রমিক হিসেবে আইনগত স্বীকৃতি। জাতীয় পর্যায়ে কিছু সাংবাদিক বেতন পান, তবে স্থানীয় সাংবাদিকদের অবস্থা অনেক বেশি নাজুক। এদের জন্য আলাদা নীতিমালা, প্রশিক্ষণ, সরকারি সহায়তা বা ঝুঁকিপূর্ণ কাজের নিরাপত্তা দরকার। এই শ্রমিক দিবসে তাই নতুন করে ভাবার সময় এসেছে শুধু মেশিন চালানো নয়, সমাজকে সচেতন করাও এক ধরনের শ্রম। সাংবাদিকতাও এক রকম শ্রমিকের কাজ। তাই ‘শ্রমিক’ বলতে সাংবাদিকদেরও বোঝা উচিত। তাদের প্রাপ্য সম্মান, ন্যায্য বেতন ও পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। কলম দিয়ে সমাজ বদলানো এই মানুষগুলোকেও শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। SHARES প্রচ্ছদ বিষয়: